প্রাচীন সভ্যতা এবং নবীন সভ্যতার সংযোগ ঘটাতেই ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের আবির্ভাব, তিনি ছিলেন যথার্থই এক ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ, তিনি সমাজের নানা ধরণের গ্লানি দূর করতে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সমস্ত ধর্মের সারতত্ত্বকে আত্তীকরণ করে এক মহাসমন্বয়ের তিনি ছিলেন পথিকৃৎ, সে জন্য তিনি মহাসমন্বয়াচার্য। তার রূপটি ছিল মানুষের মতন কিন্তু চালচলনে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র অচিন্তনীয় এক নিরঞ্জন পুরুষ, মানুষ মাত্রেই ঈশ্বর' বেদান্তের এই তত্ত্বকে চারিদিকে ছড়িয়ে দেবার জন্য লোক কল্যানার্থে এক নব ভাবনার সন্ন্যাসী দল তৈরি করেছিলেন এবং জীবজ্ঞানে শিব সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে তারা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেবার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, তিনি ছিলেন এক সচ্চিদানন্দ পুরষ, সৎ অর্থাৎ শাশ্বত জীবন, চিহ্ন অর্থাৎ সর্বব্যাপিজ্ঞান আর আনন্দ হল পরমানন্দ, সেইজন্যই তিনি ছিলেন এক ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ, তিনি মনে করতেন সব মানুষই এক একজন ঈশ্বর, সেই ঈশ্বরকে ঠিকমত অনুসন্ধান করলে তাকে পাওয়া যায়, স্বামী বিবেকানন্দের ভাবনায় শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীগৌরাঙ্গ, বুদ্ধ— ঈশ্বর, এরা সব পুরুষের মত পুরুষ, কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁদের সকলের চেয়ে বড়। মানুষের মধ্যেই ঈশ্বর বসবাস করেন, মানুষই ঈশ্বর, এই তথ্য ঠাকুরের অনুগামীরা বিশ্বাস করেন। তাঁর সাক্ষাৎ শিষ্যগণকে উপলব্ধি করিয়ে ছিলেন, স্পর্শের সাহায্যে তাদের চক্ষু উন্মীলিত করেছিলেন, নরেন্দ্রনাথকে প্রত্যক্ষ করিয়েছিলেন।

এই সংকলনটিতে গান গল্প ও কথাবার্তার মাধ্যমে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবকে জানা-বোঝা অনেক সহজতর হবে।