Keyapatar Nouka (Akhanda) কেয়াপাতার নৌকা (অখণ্ড)
প্রযুদ্ধ রায়ের 'কেয়াপাতার নৌকো'র পাঠকরা জানেন, এই বিশাল ধ্রুপদী উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র বিনু। তার প্রিয়তম নারী ধর্ষিত, অপ্রকৃতিস্থ ঝিনুককে নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীর সঙ্গে সে পূর্ব পাকিস্তান থেকে কলকাতায় চলে এসেছে। কিন্তু বিনুর আত্মীয়পরিজনের কাছে সে অবাঞ্ছিত। অপমানে গ্লানিতে অভিমানে সে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।
“কেয়াপাতার নৌকো'র পরবর্তী পর্ব 'শতধারায় বয়ে যায়”। এই পর্বটিতে বিন্নু আর পূর্ব বাংলার স্বপ্নদর্শী কিশোর বা সদ্যতরুণ নয়- সে এখন পরিপূর্ণ যুবক। অভিজ্ঞ, পরিণত, নানা ঘাত-প্রতিঘাতে ছিন্নভিন্ন। এখন বিনু নয়- সে বিনয়। একদিকে তার ব্যক্তিগত সংকট। উদ্ভ্রান্তের মতো জনারণ্যে কিনুককে খুঁজে বেড়াচ্ছে সে। অন্যদিকে জাতির জীবনেও মহাসংকট। সীমান্তের ওপার থেকে উদ্ধা আসছেই, অবিরল ধারায়। এই বিরাট মানবগোষ্ঠী শিয়ালল যোশানে, অসংখ্য প্রাণশিবিরে, কলকাতার মুখোমুখি। পশ্চিমবঙ্গের
স্বল্প পরিসরে তাদের ঠাঁই হওয়া অসম্ভব। তাই সরকারি সিদ্ধান্তে পুনর্বাসনের জন্য এদের পাঠানো হচ্ছে আন্দামানে, পাঠানো হবে ভারতের নানা প্রান্তে। এদের নিয়ে চলছে তুমুল আন্দোলন, রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি। এই সর্বস্বহারানো মানুষগুলোর সঙ্গে বিনয়ও জড়িয়ে পড়ে। ঝিনুককে। অন্বেষণ তো আছেই, তার পাশাপাশি শরণার্থীদের সঙ্গে সে আন্দামানে চলে যায়।
দেশভাগের পরবর্তী সময়ে বাংলায় যে মহাতমসা নেমে এসেছিল শিতধারায় বয়ে যায় সেই ক্রান্তিকালের অনন্য আখ্যান। আখ্যান, সেই সঙ্গে জীবন্ত ইতিহাসও। বিনয়, ঝিনুক এবং সেই কালপরিধির শত সহস্রজনকে কেন্দ্র করে এই কাহিনির শতদিকে অফুরান বিস্তার।
পদ্মা-মেঘনা-ধলেশ্বরী-কালাবদর এবং শত জলধারায় বহমান অজস্র নদী, খালবিল, অফুরান শস্যক্ষেত্র, নানা বর্ণময় পাখি-ফুল- বৃক্ষলতা—এই সব মিলিয়ে সেদিনের পূর্ববাংলা ছিল নিসর্গের এক মায়াময় ভূখন্ড। বাতাসে বাতাসে তখন জারি-সারি-ভাটিয়ালির সুর। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক তখন বড়ই মধুর, আবিলতায় ভরে যায় নি। হিন্দু-মুসলমান, দুই সম্প্রদায় ছিল পরস্পরের পাশাপাশি। তাদের মধ্যে অনেক সময় মতান্তরও নিশ্চয়ই ঘটেছে, মনান্তরও। কিন্তু ছিল না তীব্র বিদ্বেষ। এই পটভূমিতে বিনু নামে এক বালকের বড় হয়ে ওঠা। আবহমান কালের শান্তস্নিগ্ধ রমণীয় পূর্ববাংলা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় থেকেই উত্তাল হয়ে উঠতে শুরু করে। এদেশে যুদ্ধ হয় নি; কিন্তু আমেরিকান এবং ব্রিটিশ সৈন্যে ছেয়ে গেল চারিদিক। তাদের হাত ধরে ছড়িয়ে পড়ল নানা ধরনের বিষ। এল কালোবাজারি, মজুতদারি, মানুষের তৈরি কৃত্রিম খাদ্যাভাব, দুর্ভিক্ষ, মূল্যবোধের চরম বিনাশ, লক্ষ লক্ষ মানুষের অনাহারে মৃত্যু।
যুদ্ধশেষে ইংরেজরা দু'শো বছরের ভারতীয় উপনিবেশ ছেড়ে চলে যাবে। তার আগেই আরম্ভ হল দাঙ্গা। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে এতকালের সম্পর্ক লহমায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। তখন দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে শুধুই ঘৃণা, অবিশ্বাস এবং চরম শত্রুতা। বিষবাষ্পে ছেয়ে গেল দশ দিগন্ত। দাঙ্গায় খুন হল হাজার হাজার মানুষ, লুট হল অসংখ্য তরুণী। পুড়ে ছাই হল নগর-বন্দর, শত সহস্র জনপদ। তখন শুধুই হত্যা, রক্তপাত, ধর্ষণ। ভারত নামে এই দেশটি, বিশেষ করে পূর্ববাংলা যেন আদিম বর্বর যুগে ফিরে গেছে।
দাঙ্গার পরে পরেই দেশভাগ। বিনুর প্রিয় নারী ঝিনুক ধর্ষিত হয়েছে। প্রায়-অপ্রকৃতিস্থ ঝিনুককে নিয়ে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীর সঙ্গে এপারে চলে আসে বিনু। পশ্চিমবঙ্গও তখন উথালপাতাল। একদিকে জাতির জীবনে, মহাসংকট, অন্যদিকে ঝিনুককে নিয়ে বিনুর ব্যক্তিজীবনে নানা অভিঘাত। এইসব নিয়ে "কেয়াপাতার নৌকো' বিশাল পরিসরে শুধু মহাকাব্যিক উপন্যাসই নয়, বাঙালি জাতির চরম দুঃসময়ের এক মহামূল্যবান ইতিহাসও।
Name in Bengali | কেয়াপাতার নৌকা (অখণ্ড) |
---|---|
SKU | KA978K000000001 |
Type of Product | Physical |
Authors | Atin Bandhopadhyay |
Publisher list | Karuna Prakashani |
Languages | Bengali |
Binding | Hardbound |
Publishing Year | 1983 |
You may also like :
-
TopSpecial Price ₹247.00 Regular Price ₹275.00
-
SrikantaSpecial Price ₹360.00 Regular Price ₹400.00
-
EI MAITREE EI MANANTARSpecial Price ₹180.00 Regular Price ₹200.00
-
KAG NAYSpecial Price ₹135.00 Regular Price ₹150.00Out of stock