উপন্যাস লেখার প্রচলিত ছককে ভেঙে বর্ণিত চরিত্রগুলির আত্মকথনের মাধ্যমেই উন্মোচিত হয়েছে কাহিনির গতিমুখ । অতীত , বর্তমান , পূর্বজন্ম , পরজন্ম , বিশ্বাস , অবিশ্বাসের দ্বন্দ্ব ঘিরে চরিত্রগুলির যে টানাপোড়েন তারই সাথে পরাবাস্তবের মিশেলে অলীক কল্পনাগুলি প্রতীয়মান হয়ে ওঠে ছত্রে ছত্রে । যৌনচেতনা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত মেয়েটি ক্রমশ জলের অতলে জল , আকাশেরও ভিতরে আকাশ , পাথরের বুক ফাটিয়ে স্রোতস্বিনী ঝর্নার প্রাণহিল্লোল খুঁজে পায় । তার জীবনে একে একে ভেসে আসে তার গৃহত্যাগী বাবার চিঠি , বাবার বাল্যবন্ধু সংগীতসাধক উপাধ্যায়জির সাথে তার অসমবয়সি প্রেম , প্রিয় বান্ধবীকে নিয়ে তার রোম্যান্টিক কল্পনা , নকশালপন্থী ভণ্ড নেতার সাথে ব্যর্থ প্রণয় আর আজন্ম খুঁজে চলা তার নিরুদ্দিষ্ট মায়ের প্রতিচ্ছবি একসময় তাকে চরম ঘৃণা ও ভালোবাসার এক আশ্চর্য সন্ধিক্ষণে এনে দাঁড় করায় । একসময় তার ছিন্নভিন্ন জীবনে মঙ্গলময় আলোকে উদ্ভাসিত হয় চিরআনন্দ । প্রধান চরিত্রের চেতনার রঙে মিশে আছে তার অলীক পূর্বজন্ম আর বিষণ্নতার অনুভব । সেই অনুভূতি আর উপলব্ধির সাথে ম্যাজিক রিয়ালিজম মিশে নির্মিত হয়েছে এই উপন্যাস । উপন্যাস শুধুই বাস্তবতার চর্চা নয় । এই উপন্যাস যতটা জলের মতো সরল তেমনিই গভীর এর ভাবনা । অলীকতা , ছিন্নমূল হওয়ার যন্ত্রণা , ভণ্ডামি , রাজনীতি , ধর্ম , অধর্ম , ন্যায় , নীতি সব ভেসে গিয়েছে নীলজলের গভীর ভালোবাসায় । জলের কালিতে লেখা হয়েছে এই আখ্যান